পাহাড় অরণ্য ঘেরা মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় পর্যটকদের দৃষ্টিনন্দন স্থানের মধ্যে সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার রাজকান্দি রিজার্ভ ফরেস্টের কুরমা বনবিট অন্যতম। মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার রাজকান্দি সংরক্ষিত বনাঞ্চলের গভীরে কুরমা বন বিট এলাকায় অবস্থিত একটি প্রাকৃতিক জলপ্রপাত বা ঝরণা হল হামহাম বা চিতা ঝর্ণা।পানির তীব্র শব্দ, আর ঝরণা সেরকমই শব্দ করে।
কমলগঞ্জের একেবারে শেষ গ্রামের নাম কলাবনপাড়া, যেটি তৈলংবাড়ি নামেও পরিচিত। বলতে গেলে এরপর থেকেই আর তেমন কোনো জনবসতি নেই। আর এখান থেকেই শুরু হয় হামহাম যাওয়ার আসল অ্যাডভেঞ্চার।ঝরণার যৌবন হলো বর্ষাকাল। বর্ষাকালে প্রচন্ড ব্যাপ্তিতে জলধারা গড়িয়ে পড়ে। ঝরণার ঝরে পড়া পানি জঙ্গলের ভিতর দিয়ে ছড়া তৈরি করে বয়ে চলেছে। এরকমই বিভিন্ন ছোট-বড় ছড়া পেরিয়ে জঙ্গলের পথ পেরিয়ে এই ঝরণার কাছে পৌঁছতে হয়।
কিভাবে গিয়েছিলাম
যখন গাড়ি থেকে নামলাম তখন সেখানে দেখি কিছু ছেলে/মেয়ে দাড়িয়ে আছে জিজ্ঞেস করলাম কোথায় যাবেন তখন তারা বলতেছে হাম হাম যাব তখন আমি বলে উঠলাম খুব ভালো আসতেছি তোমরা জাও। তারপর দেখি সেখান কার অধিবাসী অনেক বাচ্চা লাঠি নিয়া আসতেছে দুর দিয়ে তখন ভয় ভয় লাগতেছে এখন কি কিছু করবে বাচ্চা গুলা এসে বলতেছে লাঠি নেন ৫ টাকা আমার ভয়টা ভাঙ্গল তখন দেখি ৬/৮ টি বাচ্চা আমার চার পাশে আমাকে বলছে,আমার কাছ থেকে লাঠি নেন, ভ্রমণের সময় পাহাড়ি পথে হাটার সুবিধার্থে এবং আত্মরক্ষার্থে সাথে একটি বাঁশ নিয়েছিলাম।সবাই কে বললাম জাওয়ার সময় সবাই কে চকলেট খাওয়ার টাকা দিয়ে জাব এখন জাও তোমরা।স্থানীয় এক জন লোক এসে বলতেছে আমি নিয়ে যাব আমার সাথে জাইতে পারেন তখন বললাম চলেন তখন বাবলাম যেহেতু আমাকে নিয়া জাবে ৭ কিলোঃ দুরে তখন জিজ্ঞেস করলাম আপনাকে কত টাকা দিতে হবে সে বলতেছে ৭শ টাকা আমি বললাম ৩শ টাকা দিমু আমি ছাত্র মানুষ সে বলছে আরেকটু বাড়িয়ে দিয়েন বলে শুরু হল হাটা।চম্পারায় চা-বাগান থেকে ঝরণার দূরত্ব প্রায় ৬/৮ কিলোমিটার। শুরুতে ওই সেখানের দায়িত্বে ফরেস্ট অফিসার ডাক দিয়ে বলতেছে কোথায় জাইতেছেন আমি বললাম আপনাদের এখান কার দায়িত্বে যিনি ওনার কাছ থেকে পারমিশন নেওয়া হয়েছে পারমিশন নিয়েছেন কমলগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সদস্য আমার প্রিয় ভাই। তখন সেই অফিসার বলতেছে মনে হয়েছে আমাকে স্যার বলছিলেন গত ৪ দিন আগে আপনারা দে আসবেন ঠিক আছে জাইতে পারেন। আবার শুরু করলাম হাটা পথে অত্যন্ত খাড়া মোকাম টিলা পাড়ি দিতে এবং অনেক ঝিরিপথ ও ছড়ার কাদামাটি দিয়ে পথ চলতে তাকলাম।
ঝিরিপথে কদাচিৎ চোরাবালুও এছাড়া গভীর জঙ্গলে বানর,সাপ,মশা এবং জোঁকের অত্যাচার সহ্য করে পথ চলতে তাকলাম।প্রায় ২০ মিনিট হাটার পর ভয় লাগছে এবং এত উচু পাহাড় দেখে ভয় লাগার কথা তখন হাটতে তাকলাম আর পায়ে শুরু হল ব্যাথা।বনের শুরুতেই হাতের ডানে কারন ডানের পথটা দীর্ঘ এবং অনেক গুলো উঁচু টিলা ডিংগাতে হয়েছে।হাম হামে যাবার কিছু আগে পথে দেখতে পাই আরেকটি অনুচ্চ ছোট ঝরণার। হাম হামের রয়েছে দুটো ধাপ, সর্বোচ্চ ধাপটি থেকে পানি গড়িয়ে পড়ছে মাঝখানের ধাপে, এবং সেখান থেকে আবার পানি পড়ছে নিচের অগভীর খাদে। জান যায়,ঝরণার নিকটবর্তি বাসিন্দারা আদিবাসী ত্রিপুরা।
পথের দু পাশের বুনো গাছের সাজসজ্জা যেকোনো পর্যটকের দৃষ্টি ফেরাতে সক্ষম। জারুল, চিকরাশি ও কদম গাছের ফাঁকে ফাঁকে রঙিন ডানা মেলে দেয় হাজারো প্রজাপতি। ডুমুর গাছের শাখায় চারদিকে গাছগাছালি ও প্রাকৃতিক বাঁশবনে ভরপুর এ বনাঞ্চল। মিটিংগা, কালি,ডলু, মুলি, ইত্যাদি অদ্ভুত নামের বিভিন্ন প্রজাতির বাঁশ এ বাগানগুলোকে দিয়েছে ভিন্ন এক রূপ। পাথুরে পাহাড়ের ঝিরি পথে হেঁটে যেতে যেতে সুমধুর পাখির কলরব মনকে ভাললাগার অনুভূতিতে ভরিয়ে দিয়েছে।দূর থেকে কানে ভেসে আসবে বিপন্ন বন মানুষের ডাক। কিছুদূর এগিয়ে যাওয়ার পর শুরুতে দু’চোখের সামনে ভেসে উঠছে পাহাড় থেকে ধোঁয়ার মতো ঘন কুয়াশা ভেসে উঠার অপূর্ব দৃশ্য।মনে হয়েছে যেন ওই নয়নাভিরাম পাহাড় আমাকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে।
এভাবেই হাটতে হাটতে একসময় পৌঁছে গেলাম কাঙ্ক্ষিত হামহাম জলপ্রপাতের খুব কাছাকাছি। কিছু দূর এগুলেই শুনতে পেলাম হামহাম জলপ্রপাতের শব্দ।চলে গেলাম হাম হাম ঝর্নার কাছে তখন চারিদিকে এক শিতল শান্ত পরিবেশ। ডানে বামে কোনোদিক থেকেই চোখ ফেরাতে ইচ্ছে করে না। মনে হয়েছে অনন্তকাল দুচোখ ভরে দেখে নেই প্রকৃতির এই অপূর্ব সৃষ্টি।
এই অদ্ভুত এক রোমাঞ্চকর পরিবেশে আমি ভুলে গেছি আমি কোথায় আছি, চারদিকে গহীন জঙ্গল, উপরে আকাশ, পায়ের নিচে বয়ে যাওয়া ঝির ঝির স্বচ্ছ পানির ধারা আর সামনে বহমান অপরূপ ঝর্না।আয়নার মতো স্বচ্ছ পানি পাহাড়ের শরীর বেঁয়ে আছড়ে পড়ছে বড় বড় পাথরের গায়ে।চারপাশ গাছ গাছালি আর নাম না জানা হাজারো প্রজাতির লতাগুল্মে আচ্ছাদিত হয়ে আছে পাহাড়ি শরীর। স্রোতধারা সে লতাগুল্মকে ভেদ করে গড়িয়ে পড়ছে ভুমিতে।স্মৃতিময় হয়ে তাকবে এই দিন।
সবাই সুখী হতে চায়। পৃথিবীতে এমন কাউকে পাওয়া যাবে না যে সুখী হতে চায় না। অনেকেই ভাবেন- অর্থকড়ি, শিক্ষা-দীক্ষা, বিবাহ, সন্তান-সন্ততি, পরিবার, সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রতিপত্তি মানুষকে সুখী করতে পারে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জরিপ চালিয়ে দেখা গেছে, এসব অর্জন আসলে মানুষকে সুখী করতে পারে না।
সুখ পেতে আসলে বহুতল বাড়ি লাগে না। ছোট্ট চিলেকৌঠায়ও পাওয়া যায় সুখ।আসলে লাখ লাখ মানুষের জন্য প্রকৃত সুখ যেন সোনার হরিণ। তারা সুখ কিনতে চায়, গাড়ি, বাড়ি, অলঙ্কার, কাপড়চোপড় বা ধন-দৌলতের মতো সুখও তাদের কাছে এক ধরনের পণ্য। এসব প্রাপ্তি মানুষকে সাময়িকভাবে কিছুটা সুখ দিতে পারলেও প্রকৃত প্রস্তাবে ¯’ায়ী সুখ প্রাপ্তির জন্য এসব অর্জন বড় ভূমিকা পালন করে না বলে সমাজবিজ্ঞানী, মনোবিজ্ঞানী বা চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা মনে করেন। মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, সুখ বৈষয়িক বা জাগতিক কোনো ব্যাপার নয়। সুখ বহুলাংশে মনস্তাত্ত্বিক বা আধ্যাত্মিক ব্যাপার।
এলিজাবেথ গিলবার্টের বিখ্যাত অনুপ্রেরণামূলক বই ‘ইট, প্রে, লাভ’। তার কাছে সুখের মানে মানুষের ব্যক্তিগত প্রচেষ্টা। বইটিতে বলা আছে, ‘সুখের জন্য যুদ্ধ কর“ন, সংগ্রাম কর“ন, কামড়ে ধরে থাকুন, সারা পৃথিবী চষে ফেলুন সুখের খোঁজে! সুখ পেতে আপনাকে হয়তো কর“ণ কঠিন প্রতিযোগিতার মাঝে দিয়ে যেতে হবে। আর একবার অর্জন করা হয়ে গেলে সুখের সমুদ্রে ভেসে থাকার জন্য নিরন্তর সাঁতার কাটতে হবে আপনাকে, যদি না করেন, চুঁইয়ে পড়বে আপনার সš‘ষ্টি, শেষ হয়ে যাবে সুখ।
নিরন্তর প্রচেষ্টার এই পদ্ধতি কারো কারো জন্য কাজ করতে পারে, তবে সম্প্রতি গবেষণায় দেখা গেছে ভিন্ন তথ্য। এই পদ্ধতি অধিকাংশের ক্ষেত্রেই উল্টো ক্ষতি ডেকে আনে। সাথে আসে চাপ, একাকিত্ব ও ব্যক্তিগত পরাজয়। এই দর্শন অনুযায়ী, সুখ হলো লাজুক কোনো বুনো পাখির মতো, ধরতে গেলে সে উড়ে যাবে।
অনেক মনোবিজ্ঞানী বলেন, সুখ হল জেনেটিক বা বংশানুগতিসম্বন্ধীয়। আবার কিছু বিজ্ঞানী তাদের বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের সূত্র ধরে বলেছেন, তারা মস্তিষ্কের এমন কিছু অংশ নির্ণয় করেছেন যেখান থেকে সুখ নিঃসৃত হয়। মিশিগানের হোপ কলেজের সাইকোলজি বিভাগের প্রফেসর ডেভিড মায়ার বলেন, জেনেটিক বা বংশানুগতিসম্বন্ধীয় তত্ত্বের ভিত্তিতে যে যাই বলুন না কেন, সুখ অনেকাংশেই মানুষের নিয়ন্ত্রণাধীন একটি অনুভূতি। এটি অনেকটা মানুষের কোলেস্টেরল লেভেলের মতো, যা জেনেটিক্যালি প্রভাবান্বিত, আবার বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মানুষের আচার-আচরণ বা লাইফস্টাইল এবং খাদ্যাভ্যাস দ্বারা নিয়ন্ত্রিত।সুখকে মাঝে মাঝে এক ধরনের স্বার্থিক উদ্দেশ্য বলে মনে করা হয়। মানুষের কী আছে- তার ওপর সুখ নির্ভর করে না। মানুষ কী ভাবে বা কিভাবে ভাবে- তার ওপর সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করে সুখ। যার যা আছে বা যে অব¯’ায় আছে তার জন্য শোকরিয়া জানিয়ে যদি দিন শুর“ করা হয়- তাতে সুখ আসবে। মানুষ আজ যা ভাবছে তার ওপর ভিত্তি করে তার ভবিষ্যতের সুখ গড়ে উঠবে। সুতরাং কাজ-কর্ম ও চিন্তাধারায় পজিটিভ অ্যাপ্রোচ নিয়ে শুর“ করলে জীবনে সুফল আসবে। আত্মবিশ্বাসে বিশ্বাসী, মর্যাদাবান, হৃদয়বান, জ্ঞানী-গুণী, সৎ মানুষ সাধারণত সব সময় সুখী হয়।
যারা শুধু নিতে চায়, দিতে জানে না বা চায় না, তারা সুখী হয় না।তাহলে কীভাবে সুখী হবেন? ডোপামিন নামক একটি নিউরোট্রান্সমিটারকে ‘ভালো লাগার হরমোন’ বলা হয়। গভীর ভালোবাসা বা মাদক যে তীব্র আনন্দ দেয়, তা এই ডোপামিনের জন্যই। নানা প্রক্রিয়ায় আমরা ব্রেইনের ডোপামিন লেভেল বাড়াতে পারি।তবে নিয়মিত ব্যায়াম কর“ন, আশাবাদী দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ কর“ন, জীবনে যা পেয়েছেন, হয়েছেন তার হিসাব কর“ন, কী পাননি তা নয়—কোনো বিষয়েই কারও সঙ্গে নিজেকে তুলনা করবেন না। কেননা, মূলত জীবনে তুলনা বলে কিছু নেই। আপনি এ পৃথিবীতে অনন্য ও অসাধারণ। এ জীবনে যা পেয়েছেন, হয়েছেন তার জন্য গর্ব ও তৃপ্তি অনুভব কর“ন। বর্তমানে বাঁচুন, বর্তমানে জীবন যাপন কর“ন, অতীত, ভবিষ্যৎ বা অন্য কিছু যেন মনোযোগকে বিঘ্নিত করতে না পারে—একে আমরা বলি মাইন্ডফুলনেস; যারা আনন্দ দেয়, সম্মান করে, তাদের সঙ্গে থাকুন। যা করছেন গভীর মনোনিবেশ দিয়ে কর“ন, এর মধ্যে ডুবে থাকুন—একে বলে ফ্লো। আত্মবিশ্বাস ও আত্মসম্মান বৃদ্ধি করে তেমন কিছু কর“ন। যা কিছু ভালো তা ধরে রাখুন, যা কিছু মন্দ সেসব ‘চলে যেতে’ দিন। ভালোবাসুন—মানুষকে, প্রাণীকে, প্রকৃতিকে। বেরিয়ে পড়ুন, ঘুরতে যান, প্রকৃতির সান্নিধ্যে থাকুন। ভালো আছি, সুখে আছি—এটি হোক নিত্যদিনের জপমন্ত্র। শেয়ার কর“ন নিজের আনন্দ সুখকে। জীবনে অনেকভাবে বাঁচা যায়, এক পথ বন্ধ হলে শত পথ খুলে যাবে।
ছোট বেলা থেকেই কবিতা লেখা শুরু (১৯৮৮) সময়কার কথা। মা গান গাইতেন, ভাল লাগছে। সেই অনুপ্রেরণা থেকেই গানের প্রতি ভালবাসার সৃষ্টি। সময় এসেছে গান লিখার। কলেজে নবীবরন অনুষ্ঠান, সহপার্ঠি বললো নতুন ছাত্রদের বরন নিয়ে একটি গান লিখতে হবে। সেই থেকে গানের যাত্রা শুরু।
বলছিলাম এ সময়ের এক নক্ষত্র সুদূর প্রবাসে থেকে ও সংগীত জীবনে মন প্রাণ উজাড় করে দিয়েছেন যিনি হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ পৌর এলাকার রাজাবাদ গ্রামের কৃতি সন্তান জনপ্রিয় গীতিকার ও টিভি উপস্থাপক জাহাঙ্গীর আলম রানার কথা।
বাবা-মা’র দেয়া নাম মোঃ জাহাঙ্গীর আলম এর সাথে ছোটবেলার ডাকনাম রানা যুক্ত হয়ে জাহাঙ্গীর রানা হিসেবেই লেখালেখির জগতে নিজেকে পরিচিত করে তুলে ধরেন শুরু থেকেই। ১৮ ডিসেম্বর ১৯৬৯ সালে হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ পৌর এলাকার রাজাবাদ গ্রামের এক সম্ব্রান্ত পরিবারে জন্ম তাঁর।
অষ্টম শ্রেণীতে পড়ার সময় এ.টি.এম নুরুল ইসলাম খেজুরের সম্পাদিত স্থানীয় সাহিত্য কাগজ শাখাবরাক এ আর্তি কবিতা প্রকাশের মধ্য দিয়ে লেখালেখির শুরু।
কবিতা , গল্প, গান, সব জায়গায় তার কলম চলছে সমানে। আধুনিক, দেশাত্মবোধক, লোকোগীতি , বাউল অঙ্গ, এসব মিলিয়ে প্রায় ৫০০ শত গান লিখেছেন তিনি।
শুরুটা- কলেজে নবীন বরন অনুষ্ঠান শামস খেলা নামে এক বন্ধু আবদার করলেন রানা তুই একটা গান লিখে দিতে হবে। তখন তো আমি হিমশিম খাচ্ছি কী করে যে কী করি। বন্ধু পিছু ছাড়ছে না। শেষে নিরুপায় হয়ে একটা গান লিখে দিলাম।
গানটি আমার বন্ধু শামস খেলা তার নিজের সুরে গাইলো আমি দর্শকের সারিতে বসে গানটি শুনলাম। সেদিন নিজের লিখা গানের প্রেমে পড়ে গেলাম।
শুরু হলো নতুন এক চ্যাপ্টার। ৮৭ থেকে ২০১৪। ২৭ বছর। কম সময় নয়। আধুনিক গান লিখতাম। তৃষ্ণা মিটছিল না। কোথায় যেন একটা অতৃপ্তি,না পাওয়া, হাহাকার ভেতরে ভেতরে কাজ করছিল। বুকের গহিনে যেন কিছুটা আটকে ছিল যা প্রকাশিত হবার বেদনায় ছটফট করছিল। ১৯৯০, ৯১ সাল হবে। একদিন আষাঢ় মাস। আকাশ ভেঙে নেমেছে অঝোর বৃষ্টি। দরজা জানালা বন্ধ করে ঘরে বসে আছি। সেদিন সারাটা বিকেল মাথার মাঝে দুটি লাইন ঘুরপাক খাচ্ছিল।
আমার বুকের ভিতর কে বানাইল বাড়ি
অনুমতি ছাড়াই আমার হুকুম চলে তারি
সেতায় হুকুম চলে তারি’
লিখা চলবে,
(পর্ব ১)
শহর থেকে অনেক দিন পর গায়ে এসেছিলাম সেবার। বিকালের পড়ন্ত রুদে বন্ধুদের সহিত আআড্ডা দিতে বাজারে গেলাম। মোটর সাইকেলটা বন্ধ করে চায়ের ষ্টলে ঢুকতে গিয়ে আসক আলী ভাইয়ের সাথে দেখা, তাকে চিন্তে কষ্ট হচ্ছিল তারপরও স্টলের সদর দরজার ডান পার্শের হাতল ওয়ালা চেয়ারে বসা দেখে মনে হলো তিনিই আসক ভাই। এটা তার নির্দিষ্ট সিট, তিনি ছাড়া এমন সময় এই সিটে কারো বসা নিষেধ । তাকে জীর্ণ শীর্ন বিধস্ত শরীরে বৃদ্ধ মানুষের মত লাগছে। তার হাতে লাটি আর গলার চতুর্দিকে বেন্ডেজ বাধা দেখে জিগ্যেস করলাম "কি হয়েছে আপনার "। উত্তরে বল্লেন "ঘরের চাল থেকে পড়ে গিয়ে ঘাঢ় মছকে গেছে। ডাক্তার সাহেব বেন্ডিজ করে দিয়েছেন " এও বল্লেন যে তিনি কোন কিছু চিবিয়ে খেতে পারেন না, মাড়িতে ব্যাথা পেয়েছেন প্রচন্ড।
আসক আলী ভাই বাজারে আছেন আর বাজার টান্ডা এমনটি এর আগে কখনও হয়নি। তিনি বাজারের উপর উটলেই হৈ হল্লুড় আর চিক চিতকারে সারা বাজার মাথায় তুলে ফেলতেন । তিনি দাবা, কেরাম যাই খেলতে বসেন না কেন সেখানে বাজি ধরবেনই, তাস খেলাতেতো বাজি আছেই। একদিন এক মরিছ বিক্রেতার সাথে মরিছে ঝাল আছে কি না, এই নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায় তিনি নিজের বাহাদুরি দেকাতে গিয়ে বেশ কয়েকটা নাগামরিছ হুদাই খেয়ে ফেলে ছিলেন। মুখের জ্বালাপুরা আর পেঠের পীড়ায় সপ্তাহ দুয়েক বিছানায় পড়ে থাকলেও তার বেটাগিরি কিন্তু শেষ হয়নি।
তার মত শক্ত সামর্থ্য মানুষ, যে নাকি মুহুর্তের মধ্যে আম গাছ জাম গাছে লাফিয়ে ওঠে, সামান্য ঘরের চাল থেকে পড়ে এত বড় দুর্ঘটনার সম্মুখীন হবেন, শুনে আমার বিশ্বাস হলোনা। আর সবচেয়ে বড় কথা হল তার মূল ঘরের চালে টিনের ছাউনি সেখানে উটারতো কোন দরকার নাই, শধু পাকের ঘরের চালে ছনেরর ছাউনি। এই ঘরের চালটা এত নিচু যে তার মত ৬ফুট লম্বা মানুষ মাটিতে দাড়িয়ে হাত লম্বা করলেই চালের সব টুকু তার হাতের নাগালে চলে আসবে। সব সময় পৌষ মাঘ মাসে দেখেছি কাজের লোকেরাই তার রান্না ঘরের চাল মেরামত করে দিতে হটাত করে এমন কি হল যে নিজেকেই চাল মেরামত করতে হবে। আমার মনে হলো তার আহত হওয়ার পিছনে কোন ধরনের দুই নম্বরী কিছু আছে।
আমার এমন মনে হওয়ার কারন হলো এর ধরনের দু একটা ঘটনা ইতিপূর্বে ও তার জীবনে ঘটেছে। এক বার হবিগঞ্জ থেকে আসার পথে বাসে সিটে বসা নিয়ে ঝগড়া বাদে আরেক পেসেঞ্জারের সাথে। তিনি তাকে ধাক্কা দিতেই সে "পকেট মার.. পকেট মার" বলে চিতকার চেঁচামেচি শুরু করে দেয়। পাবলিকের মার, কোন কিছু কেউ জানুক আর না জানুক তাকে ধরে উত্তম মধ্যম দেয়া শুরু করে দিল।, যতই তিনি বলেন আমি পকেট মার না ততই তার উপর পাবলিক ক্ষেপে। মৌলুভী বাজার বাস ষ্ট্যান্ডে বাস থামলে ড্রাইভার ঝামেলা মনে করে তাকে সেখানে নামিয়ে দেয় বাস থেকে, ভাগ্য ভাল ছিল তার, পাশেই তার ফুফাতো ভাইয়ের দোকান , পকেট মার ধরা হয়েছে শুনে তার ফুফাতো ভাই দোকান থেকে বাহির হয়ে দেখেন আসক আলী ভাইকে লোকজন মারছে। তিনি লোকজনকে থামিয়ে সে যে তার মামাতো ভাই এই বলে পরিচয় দিলেন আর জিগ্যেস করলেন কার পকেট মার হয়েছে? কেউ কোন উত্তর না দিয়ে মুহুর্তের মধ্যে হাওয়া হয়ে যায়। এই মারের পর অনেকদিন আসক আলী ভাইকে হাসপাতালে কাটাতে হয়েছে।
তার এমন অবস্তা হওয়ার পিছনে আসল রহস্য কি জানার জন্য বাজারের অনেককে জিগ্যেস করেছি। কেউ কোন সদ উত্তর দেয়নি। কেউ বলে তিনি চাল থেকে পড়েছেন আবার কেউ বলে তিনি আম গাছ থেকে পড়েছেন।এখন দেখি স্তান কাল পাত্র ভেদে কাহিনীরও পরিবরতন ঘটতেছে। কাহিনীর এমন পরিবরতন দেখে আমার আগ্রহও বেড়ে যায় মুল ঘটনা জানার জন্য। এই লোকচুরির পিছনের আসল কারন হল তিনি যদি শুনেন কেউ তার সম্মন্দে মানুষের কাছে খারাপ কোন কিছু বলছে তবে তার মাথা বাড়ি দিয়ে ফাটিয়ে ফেলতেও দিধাবোধ করবেন না।
আসল ঘটনা শুনার জন্য পরের দিন সকালে দুষ্টের শিরোমণি আমার গায়ের দুর সম্পর্কের এক ভাতিজার স্মরনাপন্ন হলাম। তার বায়না হলো তাকে মিষ্টি খাবার পয়সা দিতে হবে, যথারীতি ১০ টাকা দেয়ার পর তার কাছ থেকে যে তথ্য পেলাম তা ছিল ছিল রীতিমতো পিলে চমকানো।
তাকে আর্মি চেয়ারম্যানের অফিসের বারান্দায় ফেলে গরুর মত পিঠিয়েছে। তার উপর পিঠুনির মাত্রা দেখে স্বয়ং চেয়ারম্যান সাহেব নিজেই নাকি বেহুস হয়ে গিয়েছিলেন। মুল ঘটনা হলো, সেবার বন্যার রিলিফের তদারকি করতে আর্মি এসেছিল আমাদের ইউনিয়ন অফিসে। আর চেয়ারম্যান সাহেবের খাস মানুষ হিসাবে রিলিফ বন্টনের দায়িত্বে ছিলেন আসক আলী ভাই। সেদিন কোন এক দরিদ্র মহিলা রিলিফ নিতে এসেছিল- যে নাকি চেয়ারম্যানকে ভোট দেয়নি, তিনি তাকে রিলিফ না দিয়ে যাচ্ছে তাই কথাবার্তা বলে বেইজ্জত করে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন । মহিলা কেদে যাচ্ছে দেখে আর্মি জিগ্যেস করেছিল তার কান্নার কারন কি। মহিলা যখন বল্ল আমি ভোট দেইনি বলে চেয়ারম্যানের চেলা আমাকে রিলিফ না দিয়ে বেইজ্জত করেছে, আর্মি মহিলার কথা শুনতে দেরী হয়েছিল কিন্তু একশন নিতে দেরী হয়নি, মুহুর্তের মধ্যেই আর্মি তাকে কিল ঘুষি আর লাথি গুঁতা দিয়ে বেহুঁশ করে হসপিটালে পাটিয়ে দেয়। সেই থেকে তার এই অবস্তা, ভাল করে চলতে পারেন না। ঘাঢ় বাকা করে হাটেন।
তার ঘাঢ় বাকা করে হাটার অবস্তা দেখে বিশ বছর আগে পাশের বাড়ির সবুরদের ঘাঢ় বাকা হয়ে যাওয়া গাভীটির কথা মনে পড়ে গেল। বিনা কারনে শুধু তার উঠোনের ঘাস খেয়েছিল বলে তাকে এমন মার মেরেছিলেন যাতে গাভীটির ঘাঢ় বাকা হয়ে গিয়েছিল । তার কষ্ট দেখে সবুর কেঁদে ছিল, গাভীটির চোখের পানির কথা মনে হলে আজো সবুরের চোখে জল চলে আসে। সেদিন সবুরদের দিকে তাকিয়ে গাভীটি কি আর্তনাদ করে ছিল তার ভাষা না বুঝলেও নিজের আপনজনের আঘাতের প্রতিবাদ করতে চেয়েছিল সবুর.....
সবুরের মনের অবস্তা খারাপ দেখে তার মা একটা কথা বলেছিলেন যা আজও সবুরের কানে বাজে। তার মা বলেছিলেন আল্লাহ এক জন আছেন যিনি সরব শক্তিমান, প্রক্রিত বিচারক, তিনি সব কিছু দেখছেন। কেউ তার কাছে বিচার চাক বা না চাক, আল্লাহ তার বিচার করবেনই। গরু একটা হায়মান প্রানী, কেউ যদি তাকে অযথা কষ্ট দেয় তার জন্য তাকে শাস্তি পেতে হবে। তাকে এই দুনিয়ায় এর শাস্তি পেতে হবে নতুবা আখেরাতে। তার এই অবস্তা দেখে সবুরের আল্লাহর বিচার সম্পর্কে আর একটু মাত্রও সন্ধেহ রইলনা।
আমাদের আসক আলী ভাই একটা আজব কারেক্টার , তার নাম শুনলেই শিশুরা ভয়ে অস্তির হয়ে যায়। বড়দের কেউ কেউ আরালে অবডালে তাকে গদা আসক নামে ডাকেন তবে চার চক্ষু সম্মুখে কেউ তাকে এই নামে ডাকতে সাহস করেনা। আবার এর উল্টোটাও দেখা যায়, কোন কোন শিশু তার জন্য পাগল। এই শিশুরা সব সময় তার পিছনে ঘুর ঘুর করে।
আসক আলী ভাইয়ের মুল সমস্যা হল অনিয়ন্ত্রিত রাগ, রাগ উটলে তিনি হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। তার বাড়ীতে আম জাম কাঠাল কলা আর আনারস গাছে ঠাসা, তিনি এসব ফফসলী গাছের যত্ন করেন বলে এসব তার বাড়িতে অন্যান্য বাড়ির চেয়ে বেশী ফলে। তিনি কাঠালের সময় গাছের কাঠাল, আমের সময় আম, জামের সময় জাম সবার আগে শিশুদের ডেকে খাওয়ান। বাজারে বেচাবিক্রি করেন তার অনেক পর। তিনি শিশুদের খুব ভালবাসেন, আবার এই শিশুই যদি তার বাড়িতে আম খেতে গিয়ে হুড়োহুড়ি করে কোন ফুল অথবা ফলের গাছ ভেংগে ফেলে তবে তিনি হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে শিশুটিকে এমন চড় থাপ্পড় মারবেন এতে করে শিশুর যে মৃত্যুও ঘটতেপারে সেদিকে তার খেয়াল থাকেনা। কোন শিশু একবার তার হাতের উত্তম মধ্যম খেলে বাকী জীবনে তার থেকে কিছুটা দুরত্ব বজায় রেখে চলে, এটাই স্বাভাবিক ।
তিনি পশু পাখি একদম দেখতে পারেন না। তার উঠোনে গরু ছাগল ঢুকলে মহল্লায় খবর হয়ে যেত। হঠাত একদিন সকালে ভে ভে ডাক শুনে তার বাড়িতে গিয়ে দেখি তিনি পাশের বাড়ির সবুরদের একটা গাভীকে বাশের লাঠি যাকে গদা বলে থাকি দিয়ে পেঠাচ্ছেন চক্ষুবুজে। তার লাঠির বাড়ি খেয়ে গাভীটি হাউ মাউ আর কান্নার মত বিচিত্র শব্দ করে তাদের বাড়ির দিকে পালিয়েছে। গাভীটি ছিল অস্ট্রেলিয়ান প্রজাতির, গায়ে গতরে অনেক বড় হয়ে গেলেও এখনও বাচ্ছা দেয়নি। এই মারের পর গাভীটি আর ঘাঢ় সুজা করে চলতে পারতো না। কেমন যেন মন মরা হয়ে থাকত সব সময় । তার কষ্ট হচ্ছে দেখে সবুররা কোরবানির ঈদে গাভীটিকে কোরবানি দিয়ে দেয়। আজও গাভীটির জন্য তাদের মন কাদে। গাভীটি তার কোন ফল ফুল নষ্ট করেনি, শুধু উঠোনে গজিয়ে উটা ঘাস খেয়েছিল। এটুকুই ছিল গাভীটির অপরাধ।এর পর থেকে দেখতাম তার উঠোনে কোন ঘাস লতাপাতা জন্মায়নি, শুনেছি তিনি নাকি উটোনে এন্ড্রিন জাতীয় ঐষধ দিয়ে ঘাসকে জালিয়ে দিতেন, কে জানে কোনটি সত্য আর কোনটি মিথ্যা।
তার বিয়ের বয়স চলে যাচ্ছে দেখে তার গোষ্টির মোরব্বীরা ধরে তারই এক ফুফাতো বোনকে তার সহিত আকদ পড়িয়ে দিয়েছিলেন। তাদের বিশ্বাস ছিল বিয়ে সাদি করলে তার রাগ ঘোষা কমে যেতে পারে। তিনি ভাল হয়ে যাবেন। ভালো হওয়াতো দুরের কথা তিনি বউকে বারীতেই তোলেননি। তাকে যখন বিয়ের অনুষ্টানের তারিখ দেয়ার জন্য বলা হচ্ছিল তখন তিনি এটা সেটা বায়না ধরতে শুরু করলেন। ও আমাকে সালামী দিলনা, কেমন আছি জিগ্যেস করলনা, হম্বি তম্বি নানান ঝক্কি ঝামেলা। একদিন বউ ঘরে তুলব আরেকদিন তুলবনা। এদিকে যে মেয়ের সহিত আগদ হয়েছে সে তাকে জমের মত ভয় পেত। সে মেয়ে আগদের পর থেকে নফল নামাজ পড়া আর রুজা রাখা শুরু করে দিলেন। হঠাত একদিন বিকালে বিয়ের বিষয়ে আলাপ আলোচনা হবে বলে আসককে তার শ্বশুর বাড়িতে দাওয়াত দিয়ে নেওয়া হল। খাওয়া দাওয়ার পর মধ্যরাতে তারা জুড় করে তার কাছ থেকে তালাক নামা লিখিয়ে নেয়।
এর অনেক দিন পর তার ফুফাতো বোন আমাদের বাড়িতে বেড়াতে আসলে সে বল্ল আকদের পরের দিন থেকে সে আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করেছে যেন ওর বাড়িতে না যেতে হয়। মাসের পর মাস রুজা রেখেছে। শত শত রাকাত নফল নামাজ পড়েছে।
তার পাষের ঘরই ছিল জবানুল্লা চাচার, প্রতিদিন তাদের সাথে তার হাস, মুরগি, আর বিড়াল নিয়ে তার ঝগড়া হতো। তিনি হাউ মাউ আর চিক চিতকয়ার করে সমস্ত গা মাথায় তুলে নিলেও জয়নুল্লা চাচার ঘরের লোকজন তেমন কিছু বলত না। আসক কিছু সময় চিক চিতকারের পর যখন দেখতো প্রতিপক্ষ কোন বাদ প্রতিবাদ করতেছেনা তখন নিজ থেকেই বন্ধ হয়ে যেতে। তবে জয়নুল্লা চাচার বিড়াল গুলো নাকি ছিল বদের হাড্ডি, চোখের পলকে নাকি তারা তার হাড়ি পাতিল এমনকি পাতের মাছ মাংস নিয়েও চলে যেত। এদের ডিস্টার্ব থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আসক আলী খাবারের পাতিল নিয়ে বসার পুরবে সমস্ত বাড়ি বাশের লাঠি নিয়ে কয়েক ববার ঘুরে আসেন। এখানে বাড়ি দেন ওখানে লাথি মারেন এমনকি ঝুপ ঝার ও বাকি থাকেনা তার রেকি করার। তিনি এতটুকু করার পরেও একদিন যখন দেখলেন বিড়াল খাবার পাতে মাছ ভাজি তোলা মাত্রই এসে উপস্তিত, ভিতরে ভিতরে বেড়ালকে শাস্তি দেয়ার জন্য তিনি প্লান করলেন। হাতে থাকা কই মাছের মাথাটা রান্নাঘরের ফ্লোরে ছুড়ে মারলেন, মুহুর্তের মাঝেই বিড়াল ডান পা দিয়ে মাছের মাথাটাকে শীলপাঠার কাছে নিয়ে খেতে লাগলো। আসক ভাই চোখ বুঝে দুহাতে বাশের লাঠিটেকে নিয়ে গায়ে যা শক্তি ছিল তা দিয়ে বেড়ালের উপর বাড়ি বসালেন। বিড়াল তার শরীরটাকে ন্যুয়ে দেয়ায় লাঠিটার আঘাত গিয়ে লাগে শীল পাঠার উপর। লোহার মত শক্ত লাঠি থাকার কারনে লাঠিটা না ভেংগে দ্বিগুণ বেগে ফিরে এসে তার মুখে আঘাত হানে। তার চিক চিতকার আর কান্নার শব্দ শুনে আসে পাশের লোকজন দৌড়ে গিয়ে দেখেন তিনি অবচেতন হয়ে মাটিতে পড়ে আছেন, তার মুখ দিয়ে রক্ত ঝড়ছে। মাথায় পানি দিয়ে তাকে হসপিটালে নেয়া হলো। লোকজন বুঝে উঠতে পারলো না কার এত সাহস যে দিন দুপুরে তার বাড়ির উপর এসে তাকে মারল। লাঠিটাকে ক্রাইমের ইভিডেন্স হিসাবে গায়ের মোরব্বীদের কাছে জামানত রাখা হল।
ইতিমধ্যে আসকের মুখ ফুলে ফুটবল হয়ে গেছে। ডাক্তাররা তাকে ঘুমের ঔষধ দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে রেখেছেন যন্ত্রনার হাত থেকে বাচার জন্য। মোরব্বীরা ডাক্তারের সাথে কথা বলে রেখেছেন কেউ যদি আজ রাতের মধ্যেই এসে তার কাছে ক্ষমা না চায় এবং গ্রাম্য সালিস মত জরিমানা না দেয় তবে আগামীকাল এসে ডাক্তারী সার্টিফিকেট নিয়ে থানায় মামলা করা হবে। সার্টিফিকেটের জন্য যত টাকা লাগে তারা দেবেন।
গায়ের মোরব্বীরা চরম ভাবে ক্ষেপে গেছেন, "কত বড় সাহস!" ঘোষনা দেয়ার পরও রাতের মধ্যে কেউ এসে ক্ষমা চাইল না, তার মানে সে মোরব্বীদের সম্মান করেনা। "সে যাই হোক তাকে দেখিয়ে দিতে হবে" আদালতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে মোরব্বীরা আসককে দেখতে হাসপাতালে গেলেন। আসক এক টানা ২৪ ঘন্টা ঘুম দিয়ে এই মাত্র জেগেছে। মোরব্বীরা জানতে চাইলেন কে তাকে মেরেছে? কোন উত্তর না দিয়ে আসক ভে ভে করে কান্না শুরু করে দিল। মোরব্বীরা যতই চাপাচাপি করেন সে ততই কাদে। এর পর কাদো কাদো ভাংগা গলায় যা বলেছিল তার অরথ এই দাঁড়ালো,
সে জানেনা কে তাকে মেরেছে শুধু এ টুকুই জানে সে গায়ের জুড়ে বিড়ালকে বাড়ি দিয়েছিল, বিড়ালের উপর বাড়ি না পড়ে শীল পাঠার গায়ে লেগেছিল বাড়িটা, এর পর আর সে কোন কিছু বলতে পারেনা। মোরব্বীরা মামলা করাতো দুরের কথা এখন নিজেরাই ভয়ে কাঁপছেন আসকের গল্প শুনে, তাদের ধারনা বিড়ালের রুপ ধরে কোন ভুত প্রেত তার বাড়িতে উপস্তিত হয়ে গিয়েছিল।
(আমার লিখা গল্প, পুরুটাই কাল্পনিক।)
Feb 08, 2023 24 নবীগঞ্জের সংবাদ
Feb 07, 2023 17 নবীগঞ্জের সংবাদ
Feb 06, 2023 16 নবীগঞ্জের সংবাদ
Feb 06, 2023 8 নবীগঞ্জের সংবাদ
Feb 03, 2023 40 নবীগঞ্জের সংবাদ
Jan 29, 2023 16 নবীগঞ্জের সংবাদ
Jan 26, 2023 64 নবীগঞ্জের সংবাদ
Jan 23, 2023 78 নবীগঞ্জের সংবাদ
Jan 23, 2023 117 নবীগঞ্জের সংবাদ
Jan 19, 2023 38 নবীগঞ্জের সংবাদ
Jan 08, 2023 80 নবীগঞ্জের সংবাদ
Jan 03, 2023 73 নবীগঞ্জের সংবাদ
Dec 28, 2022 81 নবীগঞ্জের সংবাদ
Dec 23, 2022 99 সংবাদ
Dec 15, 2022 358 নবীগঞ্জের সংবাদ
Dec 12, 2022 134 নবীগঞ্জের সংবাদ
Dec 08, 2022 161 নবীগঞ্জের সংবাদ
Dec 06, 2022 169 নবীগঞ্জের সংবাদ
Dec 04, 2022 152 নবীগঞ্জের সংবাদ
Dec 02, 2022 240 নবীগঞ্জের সংবাদ
Dec 02, 2022 149 নবীগঞ্জের সংবাদ
Dec 02, 2022 205 নবীগঞ্জের সংবাদ
Nov 28, 2022 191 নবীগঞ্জের সংবাদ
Nov 22, 2022 207 নবীগঞ্জের সংবাদ
Aug 24, 2019 2419 নবীগঞ্জের সংবাদ
Apr 14, 2020 1883 নবীগঞ্জের সংবাদ
Apr 20, 2020 1511 নবীগঞ্জের সংবাদ
May 06, 2020 1606 নবীগঞ্জের সংবাদ
Sep 25, 2019 1748 সংবাদ
Apr 25, 2020 1735 মতামত
Apr 27, 2020 1615 নবীগঞ্জের সংবাদ
Sep 25, 2019 1809 নবীগঞ্জের সংবাদ
Oct 23, 2019 1691 নবীগঞ্জের সংবাদ