নবীগঞ্জ থানা পুলিশের বিশেষ অভিযানে হত্যা মামলার আসামীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গতকাল বুধবার রাতে মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল থানাধীন শান্তিভাগ এলাকা থেকে হত্যা মামলার এজাহারনামীয় ৩নং পলাতক আসামীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। নবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মাসুক আলীর দিক-নির্দেশনায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) দিলীপ কান্ত নাথ সঙ্গীয় অফিসার ফোর্স সহ হত্যা মামলার এজাহারনামীয় ৩নং পলাতক আসামী বড় ভাকৈর গ্রামের মাসুক মিয়ার পুত্র সজলু মিয়া (২০) বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামীকে কোর্টের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন নবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মাসুক আলী।
নবীগঞ্জে এলাকার পূর্ব বিরোধের জের ধরে পরিকল্পিত হামলা করে এক কাপড় ব্যবসায়ীর নগদ ৫ লক্ষ টাকা ছিনতাই করে একদল দুর্বৃত্তরা। গত সোমবার সন্ধ্যায় বাউশা ইউনিয়নের বাশডর (দেবপাড়া) এলাকার বিজনা নদীর চড়ে এই হামলা ও ছিনতাইর ঘটনা ঘটেছে। উল্লেখিত ঘটনায় বাশঁডর গ্রামের মৃত জাহিদ উল্লার পুত্র আব্দুল বাছিত ৪ জনের নাম উল্লেখ করে নবীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার বিবরনসূত্রে জানাযায়, আব্দুল বাছিত ও আব্দুল মুকিত এর মাঝে দীর্ঘদিন ধরে এলাকার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। আব্দুল বাছিত বাঁশডর (দেবপাড়া) বাজারের কাপড়ের ব্যবসায়ী। কাপড়ের ব্যবসার সুবাদে প্রায় সময় তিনি ঢাকা থেকে কাপড় কিনে এনে এলাকার বাজারে বিক্রি করেন। গত-১৯ ফেব্রুয়ারি কাপড় ক্রয় করার জন্য আউশকান্দি এনা কাউন্টার থেকে সিএনজি চালক সুফল মিয়ার মাধ্যমে একটি টিকেট ক্রয় করেন। সিএনজি চালককে সাথে নিয়া আউশকান্দি কাউন্টারের যাওয়ার পথ্যিমধ্যে বাউসা ইউনিয়নের বাঁশডর (দেবপাড়া) সাকিনস্থ জনৈক মাসুক মিয়ার বাড়ীর নিকট বিজনা নদীর চড়ে উল্লেখিত বিবাদী বাঁশডর (দেবপাড়া) গ্রামের আব্দুল মুকিদ,নুরুল হক,হোসাইন মিয়া,রাজা মিয়াগংরা গাড়ীর পথরোধ করে। গাড়ী থামানোর কারণ জিজ্ঞাসা করলে বিবাদীগণ আব্দুল বাছিতকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। আব্দুল বাছত প্রতিবাদ করতেই তার উপর হামলা চালিয়ে তার কাছে থাকা কাপড় ক্রয় করার নগদ ৫ লক্ষ টাকা চিনিয়ে নিয়ে যায়। আব্দুল বাছিতের আত্ন চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে হামলাকারীগন তাকে প্রাণে হত্যার হুমকি প্রদান করে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। সিএনজি চালক সুফল মিয়া তাকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করেন। ঘটনায় ৪ জনকে অভিযুক্ত করে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মাসুক আলী বলেন,অভিযোগ পেয়ছি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ হবিগঞ্জের রশিদপুর গ্যাস ফিল্ডে নতুন কূপের গ্যাস সঞ্চালনের উদ্বোধন করেছেন। এ কূপের উদ্বোধনের মাধ্যমে জাতীয় গ্রিডে নতুন করে যুক্ত হলো আরও ১৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। বিবিয়ানা গ্যাস ফিল্ডের বিষয় খতিয়ে দেখতে পূনঃরায় ভূকম্পন তদন্ত কমিটিগঠন করা হয়েছে। দিন ব্যাপী ওয়েন্টিশন কোর্স অনুষ্ঠিত হয়।বিবিয়ানা গ্যাস প্লান্টে বিবিয়ানা গ্যাস ফিল্ডে ঢাকা বিভিন্ন গন মাধ্যমের ৩৪ জন সাংবাদিক ও নবীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক অংশ গ্রহন করেন। পরে বিবিয়ানা অপটিমাইজেশন প্রজেক্টের উদ্বোধন করেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে তিনি এই কূপ দুটির উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনকালে উপস্থিত ছিলেন হবিগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আমাতুল কিবরিয়া চৌধুরী কেয়া, জেলা প্রশাসক মোছাঃ জিলুফা সুলতানা।
উদ্বোধনের পর গ্যাস ফিল্ডের ২ ও ৯ নম্বর কূপ থেকে গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়। এতে গ্যাসক্ষেত্রটির উৎপাদন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৬ মিলিয়ন ঘনফুটে।এ বিষয়ে গ্যাস ফিল্ড কোম্পানি লিমিটেডের (এসজিএফসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মিজানুর রহমান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে কূপ-২ থেকে গ্যাস উত্তোলন বন্ধ ছিল। ওয়ার্কওভারের মাধ্যমে উৎপাদন উপযোগী করা হয়েছে। ওই কূপ থেকে ৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে। ওয়ার্কওভারের মাধ্যমে এ পরিমাণে গ্যাস পাওয়ার নজির খুবই কম উল্লেখ করে মিজানুর রহমান আরও বলেন, ৯ নম্বর কূপটি নতুন, সেখানে পাইপলাইন না থাকায় গ্যাস উত্তোলন করা যাচ্ছিল না। এর আগে মন্ত্রী রোববার দুপুরে সিলেট থেকে রশিদপুর গ্যাস ফিল্ডে আসেন। রশিদপুর ২ নম্বর কূপের ওয়ার্ক ওভার পরিদর্শন ও রশিদপুর ৯ নম্বর কূপের গ্যাস গ্যাদারিং পাইপলাইন প্রকল্প কার্যক্রমের উদ্বোধন শেষে রশিদপুর তিন হাজার বিপিডি সিআরইউ প্ল্যান্ট পরিদর্শন করেন।পরে মন্ত্রী নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জের করিমপুরে অবস্থিত বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্রে যান। সেখানে শেভরনের ওপর দিন ব্যাপী ওরিয়েন্টশন ও উপস্থাপনা, শেভরনের কন্ট্রোল রুম বুস্টার ক¤েপ্রসর এবং টার্বো এক্সপেন্ডার পরিদর্শন উপস্থাপনা (টিইএক্স, বিসি, প্ল্যান্ট ওভারভিউ, রিগ অপারেশন এবং পাইপলাইন প্রেসার অপ্টিমাইজেশন অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ । এসময় বিবিয়ানা গ্যাস ফিল্ডে ঢাকা বিভিন্ন গন মাধ্যমের ৩ ৪ জন সাংবাদিক ও নবীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক অংশ গ্রহন করেন। দিন ব্যাপী ওয়েন্টিশন কোর্স অনুষ্ঠিত হয়। পরে বিবিয়ানা অপটিমাইজেশন প্রজেক্টের উদ্বোধন করেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। এরপর সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের দেন। তিনি বিবিয়ানা গ্যাস ফিল্ড এলাকায় কি পূর্বেকয়েক দফায় ভুমি কম্পনের ফলে গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্ট তিনি আমলে না নিয়ে তিনি নতুন করে তদন্ত কমিটি গঠন করেন। ১০ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রনালয়ের অতিরিক্ত সিনিয়র সচিব(উন্নয়ন) মোঃ হুমায়ুন কবিরকে কমিটির প্রধান করা হয়েছে। ১৫ দিনের মধ্যে কমিটি তদন্ত রিপোর্ট প্রধান করবেন। এবং ভুমি কম্পনে ক্ষতি গ্রস্থ বাড়ি ঘরে তালিকা করার জন্য আলাদা ভাবে শেভরনের মাধ্যমে আরেকটি কমিটি গঠন ও তালিকা প্রণয়ন করার জন্য বলা হয়। তদন্ত কমিটি গঠনের সময় উপস্থিত ছিলেন, হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোছাঃ জিলুফা সুলতানা,নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুপম কুমার দাশ অনুপ,নবীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলুল হক চৌধুরী সেলিম, ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নোমান হোসেন, আউশকান্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দিলওয়ার হোসেন,দীঘলবাক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ ছালিক মিয়া প্রমূখ।
নবীগঞ্জ পৌর শহরের বিভিন্ন সড়কে চলতি বছর ড্রেন নির্মাণের মেগা প্রকল্পের কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এদিকে নবীগঞ্জ থানা রোডে প্রায় ৩ শত ফুট পুরাতন ড্রেনের উপরই কাজ শেষ করতে যাচ্ছেন ঠিকাদারী প্রতিষ্টান। ওই ড্রেন না ভেঙ্গেই পুরাতন ড্রেন বহাল রেখে উপরে কিছু কাজ করে টাইলস বসানো হচ্ছে। এতে কমপক্ষে ৫/১০ লাখ টাকা বাচালো ঠিকাদারী প্রতিষ্টান। নীরব রয়েছেন পৌর কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্টকর্তা ব্যক্তিরা। এছাড়া নির্মিত ড্রেন গুলোতে নি¤œমানের মালামাল ব্যবহারেরও অভিযোগ উঠেছে। সুত্রে জানাযায়, চলতি বছর নবীগঞ্জ পৌর শহরের জলবদ্ধতা দুরীকরনে সড়ক ও জনপথ বিভাগ কর্তৃক মেগা প্রকল্পের আওতায় প্রায় ২৫ কোটি টাকার ড্রেন নির্মানের কাজ হাতে নেয়। সিলেটের একটি টিকাদারী প্রতিষ্টান কাজটি পেয়ে ড্রেন নির্মাণ কাজ শুরু করেন। উক্ত ড্রেন নির্মাণ কাজ শেষ হলে শহরের জলবদ্ধতা অনেকটাই কমে যাবে এমনটাই প্রত্যাশা পৌর কর্তৃপক্ষ ও নাগরিকদের। তবে এই বিশাল প্রকল্পের কাজে চলছে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি। নিম্ব মানের মালামাল ব্যবহারসহ যথাযথভাবে কাজ না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নাগরিক সমাজ। কাজ গুলো দেখা শুনার দায়িত্ব সড়ক ও জনপথ বিভাগ, হবিগঞ্জের থাকলেও তাদের তদারকি হচ্ছে নামমাত্র। টিকাদারী প্রতিষ্টান তাদের ইচ্ছমতো কাজ শেষ করতে যাচ্ছেন। এদিকে নবীগঞ্জ থানা রোডে প্রায় ৩ শত ফুট পুরাতন ড্রেন না ভেঙ্গে উপরের অংশে কিছু কাজ করেই টাইলসের কাজ শুরু করেছেন টিকাদারী প্রতিষ্টান। কার স্বার্থে এমনটা হয়েছে তা বুঝা মুশকিল। কিন্তু নীরবতা পালন করতে দেখা গেছে তদারকির দায়িত্বে থাকা সড়ক ও জনপথ বিভাগ কর্তৃপক্ষকে। বিষয়টি হতভাক করেছে পৌর নাগরিকদের। উক্ত বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়ার দাবী জানিয়েছেন নাগরিক সমাজ।
বীর মুক্তিযোদ্ধা সুবেদার মেজর অবঃ গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী (৯৭) সবাইকে কাঁদিয়ে পরপারে চলে গেছেন। গত ১৩ ফেব্রুয়ারী রাত ১২টা ৩০ মিনিটের সময় ঢাকাস্থ সি.এম.এইচ এ চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক পুত্র সন্তান ও দুই কন্যা সন্তান, ভাই-বোন সহ বহু আত্মীয় স্বজন ও শুভাকাঙ্ক্ষী রনাংগনের সাথী সহযোদ্ধা রেখে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না লিল্লাহি রাজিউন) জানাযায়, ১৪ ফেব্রুয়ারী (বুধবার) সকালে সি.এম.এইচ এর হিমঘর থেকে প্রথমে তার মরদেহ সিগন্যাল কোর সদর দপ্তরে নেয়া হয়। সেখানে শ্রদ্ধা নিবেদন সহ সামরিক মর্যাদা প্রদান শেষে বীর মুক্তিযোদ্ধা গিয়াস উদ্দিন চৌধুরীর মরদেহ তার ঢাকা ক্যান্টনমেন্টস্হ বাসভবনে নেয়ার পর সেখান থেকে গ্রামের বাড়ী নবীগঞ্জ উপজেলার (পুরাদিয়া) কামারগাঁওস্হ বাসভবনে এসে পৌছলে সেখানে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। আত্মীয় স্বজন সহ গ্রামবাসী ১৯৭১ এর রণাঙ্গনের সাথী সহযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধার সন্তানেরা জাতীয় পতাকায় আচ্ছাদিত কফিনে তাঁর মরদেহ দেখে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। পরে নুরগাঁও মাদ্রাসা ময়দানে তাঁর জানাযার নামাজ শেষে তাঁকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। এ সময় নবীগঞ্জ সহকারী কমিশনার (ভুমি) মোঃ শাহীন দেলোয়ারের উপস্থিতিতে পুলিেশর এস.আই অনিক পাল ও এ.এস.আই সুমনের নেতৃত্বে একদল চৌকস পুলিশ তাঁকে গার্ড অব অনার রাষ্ট্রীয় সালাম প্রদান করেন। জানাযার পূর্বে মরহুমের জীবন বৃতন্ত নিয়ে আলোচনা করেন, নবীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কাজী ওবায়দুল কাদের হেলাল, মরহুমের চাচাতো ভাই সমাজসেবী দিলাওর হোসেন চৌধুরী, দীঘলবাক ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক সুজাত চৌধুরী, মরহুমের পুত্র টিপু চৌধুরী সহ আরো অনেকেই। এসময় উপস্থিত থেকে জানাযায় অংশ নেন জালালাবাদ সেনানিবাসের ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ সালেহ উদ্দিন, নবীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলুল হক চৌধুরী সেলিম, নুরপুর রুহুল উলুম মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা হোসাইন আহমদ চৌধুরী, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান শেফু, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফুল জাহান চৌধুরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা জালাল উদ্দীন সিদ্দিকী, যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী কলমদর মিয়া, নবীগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযুদ্ধো সন্তান কমান্ডের সাধারন সম্পাদক নিজামুল ইসলাম চৌধুরী, বীমা ব্যক্তিত্ব আমিনুল ইসলাম চৌধুরী শামীম সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও সর্বস্তরের জনগণ। উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে সিগন্যাল কোর এর দাযিত্বরত কর্মকর্তা হিসেবে সুবেদার মেজর গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী তৎকালীন ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের দায়িত্বরত পাকিস্তানি জান্তা জেনারেল রাও ফরমান আলী কর্তৃক বাঙালী নিধনের সংবাদ দেশের সকল সেনানিবাসে প্রচারের নির্দেশ দিলে গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী তা অমান্য করে সেনাট্রান্সমিশন মেশিন বিকল করে অন্যান্য সহযোদ্ধাদের নিয়ে সেদিন অস্রাগার লুন্ঠন করে সেনানিবাস ত্যাগ করে স্বাধীনতা পাগল বাঙ্গালীদের সাথে মিশে গিয়ে ক্ষ্যাপ টাইগারের মতো পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন। পরবর্তীতে তিনি ৫নং সেক্টরের অধীনে তৎকালীন সুনামগঞ্জ মহকুমা সহ দেশের বিভিন্ন রণাঙ্গনে অসীম সাহসিকতার সহিত পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে সম্মুখ সময়ে যুদ্ধ করে লাল সবুজের পতাকা ছিনিয়ে এনেছিলেন। বিশেষ করে সিলেটের শেরপুরের যুদ্ধে তিনি অসম সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছিলেন। তিনি ১৯৭৭ সালে সেনাবাহিনী থেকে অবসর গ্রহন করে দীর্ঘদিন প্রবাস জীবন কাটালেও স্হায়ীভাবে ঢাকা ক্যান্টনমেন্টস্হ মানিকদি এলাকায় নিজ বাসভবনে বসবাস করে আসছিলেন। গতকাল বুধবার বিকেলে জানাযা শেষে পুর্ন রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় নিজ গ্রামের বাড়ী নবীগঞ্জ উপজেলার ৪নং দীঘলবাক ইউনিয়নের কামারগাঁও (পুরাদিয়া) গ্রামে দাফন করা হয়েছে।
আগামী ৯ মার্চ অনুষ্ঠেয় হবিগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপ-নির্বাচনে চার জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। নির্ধারিত সময়ের শেষ দিন মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেল পর্যন্ত জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইদুর রহমানের নিকট তারা মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। প্রার্থীরা হলেন, সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মো. আবু জাহিরের স্ত্রী ও জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলেয়া আক্তার, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আলমগীর চৌধুরী, মোঃ ফরিদ উদ্দিন তালুকদার এবং মোঃ নূরুল হক। নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ ছাদেকুর রহমান জানান, মনোনয়নপত্র বাছাই ১৫ ফেব্রুয়ারি, আপিলের সময় ১৬-১৮ ফেব্রুয়ারি, আপিল নিষ্পত্তি ১৯-২০ ফেব্রুয়ারি, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন কমিশন প্রতীক বরাদ্দ এবং ৯ মার্চ সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। হবিগঞ্জের ৯টি উপজেলা, ৫ পৌরসভা ও ৭৮টি ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হিসেবে এক হাজার ১০৪ ভোটার রয়েছেন। মনোনয়নপত্র দাখিলের পর আলেয়া আক্তার বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রতীক না দিয়ে উন্মুক্ত রেখেছেন। সেই ধারাবাহিকতায় সকলের সমর্থন পেয়ে আমি মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছি। সকলের ভোট, দোয়া, আশির্বাদ ও সহযোগিতা কামনা করি।’
নবীগঞ্জ পৌর ছাত্রদলের সদস্য সচিব অনির্বাণ নাগ অনি ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ও রাসুল (সাঃ)কে কটুক্তি করে তার ফেসবুক আইডিতে পোস্ট করে। এই পোষ্টকে কেন্দ্র করে নবীগঞ্জে ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা দেখা দেয়। এতে তাৎক্ষনিক এঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করে প্রতিবাদ জানান অনেকেই। গত রবিবার নবীগঞ্জ উপজেলার দেবপাড়া বাজারে অনিকে গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা করেন এলাকাবাসী। সভায় নেতৃবৃন্দ তাকে দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবী জানানো হয়। ফেসইবুক আইডিতে পোস্ট করার অবিযোগে নবীগঞ্জ থানার পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে। গতকাল (১২ ফেব্রুয়ারী) সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুক আলীর নেতৃত্বে একদল পুলিশ বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জানাযায়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসইবুকে ‘আস্তিক বনাম নাস্তিক ধর্ম বিজ্ঞান যুক্তিসংগত আলোচনা’ নামক ফেসবুক গ্রুপে গত ১ ফেব্রুয়ারী থেকে ৯ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত দুটি পোস্ট করে, নবীগঞ্জ পৌর এলাকার শিবপাশা গ্রামের বাসিন্দা ও নবীগঞ্জ পৌর ছাত্রদলের সদস্য সচিব অনির্বাণ নাগ অনি। গত ৯ ফেব্রুয়ারী ফেসইবুকে পোস্টে অনির্বাণ নাগ অনি রাসূল (সাঃ) কে নিয়ে কুরুচীপূর্ণ মন্তব্য করে। এর পরপরই অনির্বাণের ফেসইবুক পোস্টটির স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে আলোচনা সমালোচনা শুরু হয়। অনির্বাণ নাগ অনিকে দ্রুত গ্রেফতারপূর্বক শাস্তির দাবী করে শতাধিক পোস্ট করেন ফেসইবুক ব্যবহারকারীরা। গতকাল রবিবার নবীগঞ্জ উপজেলার সর্বস্তরের মুসলিম জনগণের পক্ষে গণস্বাক্ষর দিয়ে অনির্বানকে দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবীতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নবীগঞ্জ থানা লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়। এতে, অর্নিবানকে গ্রেফতারে পুলিশ ও গোয়েন্দা তৎপর হয়ে উঠে। ইতিপর্বেও অনির্বাণের বিরুদ্ধে ধর্মীয় ও রাজনৈতিক উস্কানিমূলক মন্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার অভিযোগও রয়েছে। বার বার ফেসইবুক আইডি হ্যাক হওয়ার দাবী করে রক্ষা পেয়ে যায়। এ প্রসঙ্গে অনির্বাণ নাগ অনি তাকে ফাঁসানো হচ্ছে বলে দাবী করে তার ফেসবুক আইডিতে পোস্ট করেছে। এরপর থেকে তার আইডি ফেসইবুকে পাওয়া যায়নি। এদিকে, সাংগঠনিক শৃংখলাভঙ্গ ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ধর্মীয় উস্কানিমূলক স্ট্যাটাস ও কমেন্টের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে নবীগঞ্জ পৌর ছাত্রদলের সদস্য সচিব অনির্বাণ নাগ অনিকে প্রাথমিক সদস্যসহ সকল পদ থেকে স্থায়ীভাবে বহিস্কার করা হয়েছে। গত রবিবার জেলা ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক সাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে তাকে বহিস্কারাদেশ প্রদান করা হয়। এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: মাসুক আলী বলেন, এ বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
শীত মৌসুম আসার সাথে সাথে এক শ্রেণির লোক কৃষি জমি থেকে অবৈধ ভাবে মাটি উত্তোলন কর বিক্রি করে আসছে। এতে নবীগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে দিনে ও রাতের বেলায় অবৈধ ভাবে মাঠি উত্তোলনের খবর পাওয়া যায়। এরই ধারাবাহিকতায় নবীগঞ্জে কৃষি জমি থেকে অবৈধভাবে মাটি উত্তোলন করায় নুরে আলম নামের এক ব্যক্তিকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারী) বিকালে নবীগঞ্জ উপজেলার বাউসা ইউনিয়নের পাইকপাড়া এলাকায় অবৈধভাবে মাটি কাটার খবর পেয়ে অভিযান পরিচালনা করেন নবীগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহীন দেলোয়ার। এ সময় তিনি বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ এর সংশ্লিষ্ট ধারায় পশ্চিম তিমির গ্রামের সেলিম মিয়ার পুত্র নুরে আলমকে অবৈধ মাটি বালু উত্তোলন করায় ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনায় সার্বিক সহযোগিতা করেন নবীগঞ্জ থানা এ.এস.আই হাসান বদরুল ও তার সঙ্গীয় একটি টিম। এ ব্যাপারে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহীন দেলোয়ার জানান, যারা অবৈধভাবে মাটি বা বালি উত্তোলন করবে তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবেনা। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।